ঢাকা, ১৩ আগস্ট - ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের করোনার ভ্যাকসিন আগামী ডিসেম্বর নাগাদ বাজারে আসবে। আর সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ। বুধবার (১২ আগস্ট) তিনি বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বর মাস নাগাদ ভ্যাকসিন বাজারজাত করতে পারবো বলে আশা করছি। গত ২ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি দেশে প্রথম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। সেদিন তারা জানায়, গত ৮ মার্চ তারা এই টিকা আবিষ্কারের কাজ শুরু করেন এবং সব পর্যায়ের কাজ শেষ করতে পারলে আগামী ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে এই টিকা বাজারজাত করা যাবে। গ্লোবের ঘোষণা দেওয়া করোনার ভ্যাকসিনের কী অবস্থা, কাজ কতদূর এগিয়েছে সে বিষয়ে জানতেই কথা হয় ডা. আসিফ মাহমুদের সঙ্গে। তিনি জানান, তারা এখনও অ্যানিমেল ট্রায়ালে রয়েছেন, সেটা এখনও শেষ হয়নি। অ্যানিমেল ট্রায়াল শেষ করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হিউম্যান ট্রায়ালের (মানুষের মধ্যে প্রয়োগ) জন্য আবেদন করবেন। হিউম্যান ট্রায়ালের তিন ধাপ শেষ করে ডিসেম্বর নাগাদ বাজারে আসবে ভ্যাকসিন। শুরু থেকে ভ্যাকসিন প্রক্রিয়ার পরিক্রমায় কোনও ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন কিনা জানতে চাইলে ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের জিওগ্রাফিক লোকেশনে রি-এজেন্ট প্রকিউরমেন্ট একটা সমস্যা, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সও একটা সমস্যা। এই সমস্যাগুলো আগেও ছিল, এখনও আছে। কার্গো ফ্লাইটগুলো নিয়মিত আসছে না। অ্যানিমেল ট্রায়ালের জন্য যে জিনিসগুলো প্রয়োজন সেগুলোর কিছু কিছু এখনও পুরোপুরি এসে পৌঁছায়নি। অ্যানিমেল ট্রায়ালের জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার পর কিছু অ্যানালাইসিস রয়েছে, যার কিছু রি-এজেন্ট দরকার হয়। সব জিনিস এখনও হাতে না এলেও চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ডা. আসিফ। তিনি আশা করছেন, খুব দ্রুতই সেগুলো চলে আসবে। জানা গেলো নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা কেন্দ্রে প্রাণীর ওপর ট্রায়াল চলছে, বাকি কাজ চলছে তাদের ল্যাবে। আরও পড়ুন: মেজর সিনহা হত্যার গণশুনানি করবে তদন্ত কমিটি গ্লোব কি প্রকৃত অর্থেই কোনও ভ্যাকসিন আনতে পারবে? এমন প্রশ্নে ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, বিশ্বে এখন অনেকেই ভ্যাকসিনের জন্য চেষ্টা করছে। রাশিয়া ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে। আরও বেশ কিছু ঘোষণা শিগগিরই আসবে। বাংলাদেশে ভ্যাকসিন নিয়ে কেউ কাজ করছে এমনটা আমার জানা নেই। তাই দেশে কেউ যদি পারে তাহলে আমরাই পারবো। কারণ, কাজটা তো শুরু করেছি আমরা। গ্লোব এতদূর এসেছে থেমে যাওয়ার জন্য নয়। অবশ্যই এর শেষ দেখতে চাই আমরা। আমার মনে হয়, কেউ যদি পারে বাংলাদেশে গ্লোবই পারবে। বর্তমানে যে অ্যানিমেল ট্রায়াল চলছে সেখানে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও কার্যকর কিনা সেটা দেখা হচ্ছে। হিউম্যান ট্রায়ালের আগে এই দুটি বিষয় অ্যানিমেল ট্রায়ালে অবশ্যই কনফার্ম করতে হয়। এই অ্যানিমেল ট্রায়াল শেষ করেই নিয়ম অনুযায়ী তারা পরবর্তী ধাপে যাবে। ভ্যাকসিনটাকে এমনভাবে তৈরি করতে হচ্ছে যাতে সরাসরি মানুষের শরীরে দেওয়ার উপযোগী হয়। এসব কারণে সময় একটু বেশি লাগছে বলে জানান ডা. আসিফ মাহমুদ। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অ্যানিমেল ট্রায়ালের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। আন-অফিসিয়ালি আমরা অবশ্য কথা বলে নিয়েছি। তাদের কাছ থেকে কোনও অ্যাপ্রুভালের প্রয়োজন এখন নেই। অ্যানিমেল ট্রায়ালের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বিএমআরসি এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদন নেওয়া হবে। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন এন এইচ, ১৩ আগস্ট

from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Fdp7O4
দেশীয় করোনা ভ্যাকসিন আসতে পারে ডিসেম্বরেই