ঢাকা, ১২ আগস্ট - ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের (সিটিটিসি) টিমের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম বলেছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ) বড় ধরনের জঙ্গি হামলা চালানোর মতো সক্ষমতা নেই। তাদের নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে গেছে। তিনি বলেন, তাদের সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। বর্তমানে নব্য জেএমপির সদস্যরা অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। তারা হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার শরীফে আরেকটি হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু পুলিশের কড়া নজরদাদির কারণে তাদের মিশন ব্যর্থ হয়। আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মনিরুল ইসলাম। সিটিটিসি টিমের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। মনিরুল ইসলাম বলেন, পল্টনে বোমা বিস্ফোরনের ঘটনায় মঙ্গলবার অপারেশন এলিগ্যান্ট বাইট চালিয়ে সিলেটের মিরাবাজার, টুকের বাজার, দক্ষিণ সুরমাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নব্য জেএমবির ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশের মানুষ হারানো অধিকার ফিরে পাবে : রিজভী গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান (২৬), সানাউল ইসলাম সাদি (২৮), রুবেল আহমেদ (২৮), আব্দুর রহিম জুয়েল (৩০) ও সায়েম মির্জা (২৪)। তাদের কাছ থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃতরা নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। তারা কথিত আইএস এর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য গত ঈদুল আযহার পূর্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে তারা গত ২৪ জুলাই রাজধানীর পল্টনে পুলিশ চেকপোস্টের পাশে এবং গত ৩১ জুলাই নওগাঁ জেলার সাপাহার এলাকায় হিন্দু ধর্মালম্বিদের মন্দিরে বোমা হামলা করে। এছাড়া তারা গত ২৩ জুলাই হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার শরীফে আরেকটি হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর মধ্যে তারা পল্টন ও সাপাহারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হয়। কিন্তু সিলেটে পুলিশের কড়া নজরদারির কারণে তারা ব্যর্থ হয়। প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে তারা জানান, নব্য জেএমবির শুরা সদস্য শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে তারা সিলেটের শাপলাবাগের একটি বাসায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণের আড়ালে সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলো। তাদের মধ্যে শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান কফি শপে (বারিস্তা) কপি মেকার হিসেবে কাজ করে। তিনি ২০১৯ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে অনার্স সম্পন্ন করে। তিনি ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক এবং সামরিক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে তিনি সিলেটের শাপলাবাগের বাসাটি ভাড়া নেয়। সানাউল ইসলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র। জঙ্গিরা আরো জানান, রুবেল আহমেদ ২০১৬ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ব্লু-বার্ড সিলেট শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়। তিনি সিলেটে টুকেরবাজারে সার, বীজ ও কিটনাশকের ব্যবসা করতেন। আব্দুর রহিম জুয়েল রেন্ট এ কারের ড্রাইভার হিসেবে কাজ করত। তার গাড়ি ব্যবহার করে তারা সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করেছিলো। সায়েম মির্জা সিলেটের মদন মোহন কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। উল্লেখ্য, তারা গত ২৪ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর পল্টন মডেল থানার পুরানা পল্টন এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। ঘটনাস্থল থেকে আইইডিতে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক টেপ, জিআই পাইপের কনটেইনার, সার্কিটের অংশ, তারের অংশ বিশেষ, লোহার তৈরি বিয়ারিং ও বল, নাইন ভোল্ট ব্যাটারির অংশ বিশেষ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ডিএমপির পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। সূত্র : ইত্তেফাক এন এইচ, ১২ আগস্ট

from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/30MWGPu
বড় ধরনের জঙ্গি হামলা চালানোর সক্ষমতা নব্য জেএমবির নেই: মনিরুল