ঢাকা, ৩১ জুলাই- করোনাভাইরাসের ভয় উপেক্ষা করে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে সবাই। এ ঈদযাত্রায় সড়কে ঝরল শিশু ও নারীসহ ১১ জনের প্রাণ। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৪ জন রয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। শুক্রবার সকালে পৃথক দুর্ঘটনায় সিলেটে একই পরিবারের চারজনসহ ৫ জন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ৩ জন ও হবিগঞ্জের বাহুবলে ৩ জন নিহত হয়েছেন। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর: সিলেট ব্যুরো: সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে বাস ও প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একই পরিবারের চারজনসহ ৫ জন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও এক শিশু। হতাহতরা সবাই প্রাইভেটকারের যাত্রী। ঈদের আগের দিন শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে তাজপুরের বড়াইয়া চাঁনপুর নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের তাজপুর এলাকার চাঁনপুর নামক স্থানে সিলেটগামী প্রাইভেটকারের সঙ্গে কুমিল্লাগামী কুমিল্লা ট্রান্সপোর্টের একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তিনি জানান, এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান প্রাইভেটকারের ৫ যাত্রী। আহত হন আরও একজন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছে। নিহতরা হলেন স্বপন কুমার দাস, লাভলী রানী সরকার তাদের যমজ সন্তান শৈবাল (৭) ও সাজন (৭)। আহত সৌরভ (১২) নামের এক সন্তান। তাদের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের লইয়াকুল গ্রামে বলে নিশ্চিত করেছেন সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক কোবাদ আলী সরকার। আরও পড়ুন: করোনা ছড়ানোর জন্য তরুণদের দায়ী করল ডব্লিউএইচও নিহত অপরজন ওই প্রাইভেটকারের চালক আবদুল হাসিম। তার বাড়ি কমলগঞ্জে। জানা গেছে, একটি এনজিওতে চাকরি করতেন স্বপন কুমার দাস। ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার শ্যামারচরে যাচ্ছিলেন তিনি। গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা): গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কাভার্ডভ্যান ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন। হতাহতরা সবাই বন্ধ কাভার্ডভ্যানের মধ্যে ছিল। শুক্রবার ভোরে উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের নুনদহ ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাভার্ডভ্যান খুলে হতাহতদের উদ্ধার করে। নিহতরা হলেন রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বানেস্বর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে আশিকুর রহমান (৫৬), গঙ্গাচড়া উপজেলার কিশমতপুর গ্রামের মল্লিক আলীর ছেলে সাহেব মিয়া (৩০), একাই উপজেলার ইসমতপুর গ্রামের তোফায়েল আহম্মেদের ছেলে কাজল মিয়া (৩২)। হতাহতরা সবাই টাইলস বোঝাই কাভার্ডভ্যানের যাত্রী। তারা ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ ও গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের ২টি দল হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। এসময় দুর্ঘটনা কবলিত বন্ধ থাকা কাভার্ডভ্যানের মধ্যে মৃত অবস্থায় ৩ জনকে ও আহত অবস্থায় ৬ জনকে উদ্ধার করা হয়। বাহুবল (হবিগঞ্জ): হবিগঞ্জের বাহুবলে বাস ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোর ৬টায় উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পুটিজুরী এলাকার আব্দানারায়ন কালিবাড়ি নামক স্থানে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দশঘর গ্রামের রুহেলের স্ত্রী শাহিদা (৩৫), ফিরোজ মিয়ার মেয়ে মালেহা (৩৫)। অপর নিহত প্রাইভেটকারচালকের পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ জানায়, ঢাকা গাজীপুর থেকে ঈদুল আজহার ছুটিতে গার্মেন্টস শ্রমিক শাহিদা স্বামীসহ একই এলাকার তিন সহকর্মীকে নিয়ে শুক্রবার ভোর রাতে প্রাইভেটকারযোগে গ্রামের বাড়িতে ফেরার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী এলাকার আব্দানারায়ন কালিবাড়ি নামক স্থানে এসে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা মনোহরদী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই চালক ও গার্মেন্টস কর্মী মালেহা নিহত হন এবং চারজন গুরুতর আহত হন। আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করলে ছাড় নয় আহতরা হলেন সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দশঘর গ্রামের রাহুলের স্ত্রী গার্মেন্টস কর্মী শহিদা (৩৫), পিরোজ মিয়ার ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩৫), শুকুর আলীর ছেলে রুহুল (৩০) ও শহিদ মিয়ার মেয়ে নাজমা (৩০)। বাহুবল হাসপাতালে নেয়ার পর গার্মেন্টস কর্মী শাহিদা মৃত্যুবরণ করেন। খবর পেয়ে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ও শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া প্রাইভেট কারটি রাস্তা থেকে সরিয়ে আধা ঘণ্টা পরে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেন। বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাইভেটকারটি নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে যাওয়ার কারণেই হয়তো দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছে। সূত্র : যুগান্তর এম এন / ৩১ জুলাই

from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3jXm7FG
ঈদযাত্রায় সড়কে ঝরল ১১ প্রাণ